04:06 PM, 07 Apr 2018
যার জন্য জেলে সালমান

বিআর রিপোর্ট

৫ বছরের কারাবাসের রায় মাথায় নিয়ে জেল খাটছেন বলিউড হার্টথ্রব সালমান খান। ‘ভাইজানের’ এই জেল খাটার পেছনে আর কেউ নয়, রয়েছে হরিণ।

এই হরিণটি আবার সাধারণ নয়- কৃষ্ণ হরিণ যা চিংকার নামেও পরিচিত। ভারতে এটি সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায়। এর চেয়েও বড় কথা এটা আবার ‘বিনশয়’ সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পূজনীয়।

ভারতের রাজস্থানের যোধপুরের আদালতে সালমান খানের সাজা হয়। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে বিনশয় সম্প্রদায়ের মানুষই সালমান খানসহ একটি শুটিং ইউনিটের আরো কজনের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণ হরিণ হত্যার অভিযোগে মামলা করে।

তখনই সালমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১০ দিন পর জেল খাটার পর জামিনে ছাড়া পান তিনি। ২০ বছর পর গত বৃহস্পতিবার সেই মামলায় তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।

এর মাঝে ফুটপাতে গাড়ি উঠিয়ে মানুষ হত্যার মামলায় তিনি রেহাই পেয়েছেন। কিন্তু দুটি হরিণ শিকারের মামলা তাকে ছাড়েনি। প্রধান কারণ বিশনয় সম্প্রদায় এই মামলার পেছনে ক্রমাগত লেগে ছিল।

বিষ্ণুর পূজারি বিশনয় সম্প্রদায় কয়েকশ বছর ধরে ২৯টি রীতি অক্ষরে অক্ষরে মানার চেষ্টা করে। সেই সব রীতির মূল কথা- প্রকৃতির সুরক্ষা, বৃক্ষ রক্ষা, জঙ্গলের প্রাণী রক্ষা। চিংকার হরিণকে বিশনয় সম্প্রদায় পবিত্র হিসেবে গণ্য করে পূজা দেয়। প্রাচীন হিন্দু পুরানের এই কৃষ্ণ হরিণের উল্লেখ রয়েছে যে এরা ভগবান কৃষ্ণের রথ টানতো। চিংকারকে মানা হয় বাতাস এবং চাঁদের বাহন হিসাবেও।

বিশ্বাস ও ভক্তির কারণেই প্রভাবশালী বিশনয় সম্প্রদায় ২০ বছরেও এই মামলা নিয়ে হাল ছাড়েনি। সঙ্গে ছিল প্রাণী ও পরিবেশ সংরক্ষণের আন্দোলনকারীদের সাহায্য।

কৃষ্ণ হরিণের আদিঅন্ত

দিন দিন কমতে থাকা এই হরিণ ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে দেখা যায়। ভারতের রাজস্থান ও গুজরাটের মরু এলাকায় এগুলো চেখে পড়ে বেশি। পুরুষ চিংকারের ওজন সর্বোচ্চ ৪৫ কেজি। উচ্চতা ৭৪-৮৮ সেমি। মাদি চিংকার অপেক্ষাকৃত ছোট।

চিংকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি রং বদলায়। বর্ষার শেষে পুরুষ চিংকারের রং থাকে কালো। কিন্তু শীতের সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে হতে এপ্রিল নাগাদ বাদামি হয়ে যায়। ঘন জঙ্গল নয়, সমতল ভূমি এদের পছন্দ। ভারতের চিংকার শিকার নিষিদ্ধ।