
বিআর রিপোর্ট: রাজবাড়ীর সদর উপজেলায় বোরকা পরে এক স্কুলছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার ভোরে এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা ফজলুর রহমান চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এরআগে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ স্কুলছাত্রলী খানখানাপুর তমিজউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
স্কুল ছাত্রীর মা নাসিমা বেগম বলেন, ঈদের দিন প্রতিবেশী শিল্পী বেগম আমার মেয়ের কাছে অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে আমার মেয়ে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে দুইবোন বসে জাম খাচ্ছিল, আমি তখন ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। এসময় ছোট মেয়ের চিৎকারে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বড় মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই বোরকা পড়া দুজন লোক তাকে তুলে নিয়ে গেছে বলে ছোট মেয়ে জানায়। তখন আমিও চিৎকার করতে থাকি। এতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অনেক খোঁজাখুজির পর ঘরের পেছনে পাটক্ষেত থেকে বড় মেয়েকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়।
ওই স্কুলছাত্রীর বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মো. সোহেল ব্যাপারী বলেন, গত শুক্রবার রাতে নিরাপত্তাহীনতায় থেকে এ ঘটনাটি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করি। এর কিছুক্ষণ পর রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার পুলিশ পাঠিয়ে থানায় ডেকে নিয়ে বিস্তারিত জেনে আমাকে মামলার পরামর্শ দেন।
আহত স্কুলছাত্রী বলেন, পাশের গ্রামের রাজু নামে এক ছেলে আমাকে পছন্দ করতো। এই পছন্দের কথা স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পী বেগম জানতেন আর এটাকে কেন্দ্র করেই তিনি আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি বিষয়টি পরিবারকে জানালে বৃহস্পতিবার শিল্পী আক্রোশে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে আমার জামায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রতিবেশী সাথী সরকার জানান, চিৎকার চেঁচামেচিতে আমরাও এগিয়ে গিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করি। তার মাথায়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং গায়ের জামা কাপড় ছেড়া ছিল।
রাজবাড়ীর এসপি আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় শিল্পী বেগমসহ অজ্ঞাত চার ব্যক্তির নামে একটি মামলা করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দুটি দল মাঠে কাজ করছে এবং আসামি ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।