08:15 AM, 30 May 2019
ঈদকে সামনে রেখে ঝাঁজ বাড়ছে মসলার

বিআর রিপোর্ট: পবিত্র রমজান মাস প্রায় শেষ। দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতরের আগমনী বার্তা। ইবাদত বন্দেগির পাশাপাশি চলবে রঙ-বেরঙের পোশাক পরে ঘোরাঘুরি আর বাহারি খাওয়া দাওয়া। 

আর সেজন্য রাজধানীর মসলার বাজারগুলোতে এরই মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। ঈদে মাংস-বিরিয়ানিসহ মজাদার খাবার রান্নায় বিভিন্ন ধরনের মসলার প্রয়োজন হয়। তাই এ সময় তুলনামূলকভাবে চাহিদা বাড়ে মসলার। এ সুযোগে দামও বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এ বছরও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। 

রাজধানীর মসলার বাজারে এরই মধ্যে এলাচের দাম কেজিতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়ে গেছে। রোজা শুরুর দিকেও যে এলাচ বিক্রি হতো ২৩০০-২৪০০ টাকা কেজি, এখন তা ২৮০০-৩০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজিতে এলাচ বিক্রি হয়েছে। একইভাবে বেড়েছে জয়ত্রী ও পেস্তা বাদামের দাম। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মানভেদে বর্তমানে প্রতি কেজি জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০০ টাকা; পেস্তা বাদাম বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২১৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৭০০ টাকা, দারুচিনি ২৮০-৩৫০ টাকা, লবঙ্গ ৮৫০-৯৫০ টাকা, জিরা ৩২০-৪৫০ টাকা, তেজপাতা ১০০-১৪০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ৭০০ টাকা, কালো গোলমরিচ ৫০০ টাকা, জয়ফল ৪৫০-৯০০ টাকা, কিসমিস ৩০০-৩৭০ টাকা, আলুবোখারা ৩৩০ টাকা, পোস্তদানা ৯৮০-১১৫০ টাকা, কাঠবাদাম ৭৫০-৮০০ টাকা, কাজুবাদাম ৯০০-১০০০ টাকা ও চীনাবাদাম ১২০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 
 
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মসলা ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, মসলার আমদানি শুল্ক বেড়েছে। খরচ বাড়লে পণ্যের দামের ওপর তার প্রভাব পড়ে। পাইকারী থেকে খুচরা সবখানেই দাম বেড়ে যায়। এ সময় ওই দোকানের ক্রেতা মামুনুর রহমান বলেন, প্রতি বছরই ঈদের সময় মসলার দাম বেড়ে যায়। আর এতে করে বিপাকে পড়তে হয় মধ্যবিত্তদের। কিছু কিছু মসলার দাম এতো বাড়ে যে, কেনাই দায় হয়ে পড়ে। 

তিনি বলেন, কোনো উৎসব এলেই ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মসলার দাম বাড়িয়ে দেন। আর আমরা সাধারণ ক্রেতারা বাড়তি দাম দিয়ে তাদের অপকৌশলের বলি হই।

কারওয়ান বাজারের মসলা ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান বলেন, বেশির ভাগ মসলার দাম এবার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে এলাচ, জয়ত্রী ও পেস্তা বাদামের দাম কিছুটা বেড়েছে। ঈদের জন্য এগুলোর দাম বাড়েনি বলেও দাবি করেন তিনি। আমদানি কম হওয়াকেই দায়ি করেন এই ব্যবসায়ী। 

এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী সুযোগ পেলেই অতিরিক্ত মুনাফা করতে চায়। তাদের নীতি-নৈতিকতার ঘাটতি রয়েছে। তাদের এই মানসিকতার উন্নয়ন না হলে শুধু জেল-জরিমানা করে অবস্থান উন্নতি হবে না। এক্ষেত্রে ভোক্তারা প্রতিবাদস্বরূপ দাম বাড়িয়ে দেয়া পণ্য না কিনলে বা কম কিনলে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা করার প্রবণতা কমে যাবে বলেও উল্লেখ করেন গোলাম রহমান।